সোজাসাপটা রিপোর্ট : বন্দরের ফরাজিকান্দা এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ মইনুল হক পারভেজের ভাই তানভীর আহাম্মেদ বাদী হয়ে বন্দর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে দায়ের করা ওই মামলায় মোট ১১ জনকে এজাহারনামীয় আসামি ও আরও ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামী করা হযেছে আলী হায়দার শামীম ওরফে পিজা শামীম (৬০)কে। অন্য আসামীরা হলেন- নুর মোহাম্মদ (৫৫), রায়হান জাদা রবি (৪৫), মামুন (৪৮), মনির হোসেন মনা (৫২), কবির (৫৫), আমির হোসেন (৩৮), উৎসব (৪০), মুকিত (৪৫), মুহিদ (৪০) ও পাঠান রনি (৪২)। যদিও মামলার পর পুলিশ এজহারনামীয় ৪ আসামী ও অজ্ঞাত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি আজমেরী ওসমানের অন্যতম সহযোগি এবং হামলার নেতৃত্বকারী সিদ্ধিরগঞ্জ আরামবাগ এলাকার হাবিবুর রহমান হবির ছেলে অস্ত্রবাজ কাজি আমির ওরফে কিলার আমিরসহ তার সঙ্গীয়দের। এ বিষয়ে বন্দর থানায় আমিরকে ৫ নং আসামী করে মামলা করেন চেয়ারম্যানের ছেলে তানভীর যার নং ৩৬( ১৭/৩/২৩)।
গতকাল একটি অনলাইন মিডিয়াতে ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বন্দরে জমি দখলের জন্য কাজি আমিরের নেতৃত্বে দখলবাজরা দেশীয় অস্ত্র ও বিদেশী পিস্তলসহ বিভিন্ন প্রকার অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। এ আমিরের পাশে থাকা ডালিম ও সনেটের হাতে প্রকাশ্যে অস্ত্র থাকলে তা উদ্ধার এবং আসামী গ্রেফতারে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বন্দর থানা পুলিশ অভিমত বন্দরবাসীর।
উক্ত ভিডিওতে দেখা যায়,সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রয়াত রাইসুল চেয়ারম্যানের পুত্রবধু আবিদা সুলতানা সুমা বলেন,কাজি আমিরের নেতৃত্বেই দখলদাররা আমাদের জমি দখল নিতে নিরীহদের উপর হামলা চালায়। এবং কাজি আমিরের রামদায়ের কোপে আমি মারাত্নকভাবে মাথায় জখম হই। এবং আমার পা ভেঙ্গে ফেলে পিটিয়ে। এছাড়াও স্থানীয় কয়েকজন বলেন,হামলার সময় আমিরের কোমড়ে একটি অস্ত্র ছিলো।
এদিকে জমি দখলের ঘটনায় কাজি আমিরসহ এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার না করার ফলে সন্দেহের তীর বাসা বেধেছে বন্দরবাসীর মাঝে। স্থানীয়দের অভিমত আজমেরী ওসমানের এ হোন্ডা বাহিনী দিনের পর দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
কিন্তু উক্ত হোন্ডা বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় পুরো নারায়ণগঞ্জবাসী মনে প্রশ্ন জেগেছে তাহলে প্রশাসনের চেয়ে কি হোন্ডা বাহিনী অধিক ক্ষমতাশালী? আর এ হোন্ডা বাহিনীর অন্যতম সদস্য হলেন কিলার আমির। যার অপরাধকর্ম ধীরে ধীরে পুরো নারায়ণগঞ্জ ব্যাপী ছড়াচ্ছে। আর এ সকল ভুিমদস্যুতাসহ বিভিন্ন অপরাধের ফলে আমিরের বিরুদ্ধে প্রায় ৭ টি মামলা ও ১৮টি জিডি রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বন্দর থানাধীন ফরাজিকান্দা বাজার এলাকার নামচর মৌজার সি.এস ও এস.এ দাগ নং ২০, আর.এস, ৩ ও ৪ নং দাগে ৬৬ শতাংশের একটি জমি নিয়ে মামলার আসামিদের সঙ্গে বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ঘটনার আগের দিন বুধবার (১৫ মার্চ) রাতে মামলার প্রধান আসামি আলী হায়দার শামীম ওরফে পিজা শামীম তার অনুসারী হোন্ডা বাহিনীর ২০-২৫ জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে বাদীর বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেন। তার পরের দিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ মামলার এজহারনামীয় আসামিরাসহ আরও ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী জোরপূর্বক ওই জমি দখলের চেষ্টা করেন।
খবপেয়ে মইনুল হক পারভেজের স্ত্রী আবিদা সুলতানা সোমা (৩৬) ঘটনাস্থলে গেলে আসামি আলী হায়দার শামীম সোমার ওপর নির্যাতান চালায়। খবর পেয়ে তার স্বামী মইনুল হক পারভেজ এলাকার লোকজন নিয়ে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে মামলার প্রধান আসামি আরও উত্তেজিত হয়ে তার হাতে থাকা আগ্নেআস্ত্র দিয়ে মইনুলের পায়ে গুলি করেন।