রফিকুল ইসলাম জীবন : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বদলে যাচ্ছে দেশের সার্বিক রাজনৈকি পরিস্থিতি। বিশেষ করে দেশের চারটি বড় দলের মাঝে নয়া মেরুকরনের সম্ভাবনা পরিস্কার হয়ে উঠেছে। এই চারটি বড় দল হলো আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টি এবং জামাত। এতো বছর জাতীয় পার্টির জোট ছিলো সরকারী দল আওয়ামী লীগের সাথে আর জামাতের জোট ছিলো বিরোধী দল বিএনপির সাথে। কিন্তু এরই মাঝে এসব জোটের মাঝে নয়া মেরুকরন ঘটে গেছে।
ভেঙ্গে গেছে বিএনপি জামাত জোট। আর আওয়ামী লীগের সাথেও জাতীয় পার্টির কোনো মধুর সম্পর্ক নেই বরং বিএনপির সাথে তাদের এক ধরনের সখ্যতা গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। যেমন সম্প্রতি জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে বিএনপিকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে এবং সেই ইফতার মাহফিলে বিএনপি যোগ দিয়েছে। বিপরিতে বিএনপির ইফতার মাহফিলেও জাতীয় পার্টিকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে এবং সেই ইফতার মাহফিলে জাতীয় পার্টি যোগ দিয়েছে।
দেশের রাজনীতি যারা পর্যবেক্ষন করছেন তাদের মতে এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে যতো দিন যাচ্ছে ততোই একটি বিষয় পরিস্কার হচ্ছে, আর সেটি হলো দেশে গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার করার জন্য আওয়ামী লীগের বাহিরে দেশের বড় রাজনৈকি শক্তিগুলো একতাবদ্ধ হচ্ছে।
জামাতকে বিএনপির জোট থেকে বাদ দেয়া হলেও জামাতও সরকার বিরোধী অবস্থানেই থাকবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তারাও চাইবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তাদের সাথে সরকারের কোনো সমঝোতা করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করেন রাজনৈতি পর্যবেক্ষক মহল।
তবে জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে দেশের সাধারন মানুষের মাঝে যথেষ্ট অবিশ^াস রয়েছে। কারন জাতীয় পার্টি এর আগেও বার বার সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত সেটা পারেনি। এর আগে জিএম কাদের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করলে মামলা করে তার কথা বলার পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। সেই মামলায় বহুদিন লড়াই করার পর এখন আবার তিনি নতুন করে মাঠে নেমেছেন।
কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ রয়েছে সরকারের পক্ষে। তিনি বেশ অসুস্থ্য এবং সরকারের সহযোগীতায় চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাই তিনি শেষ পর্যন্ত সরকারের পাশেই থাকবেন। তবে জিএম কাদের যদি শেষ পর্যন্ত তার এই সরকার বিরোধী অবস্থান ধরে রাখতে পারেন তাহলে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে যাবে বলে অনেকে মনে করেন।
কারন এরই মাঝে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেটা বলা যাচ্ছে না। যুক্তরাস্ট্র সহ পশ্চিমা চাঁপে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার একটি ক্ষীন সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের আরো আগে থেকে বেশ পরিস্কার করেই বলছেন সরকারকে সমর্থন করে তারা দেশর জনগনের কাছে মর্যাদা হারিয়েছেন। এখন তারা সেই হারানো মর্যাদা ফিরে পেতে চান। দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করতে চান। জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয়পার্টির নেতারা জনগনের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথাও বলছেন। তারা নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপ করার সময় রাতের ভোটের কথাও বলেছেন। তাই বিএনপি জামাত জোট ভেঙ্গে এখন বিএনপি জাপা জোট হলে অবাক হওয়ার তেমন কিছু থাকবে না। কারন রাজনীতিতে শেষ কথা বলে আসলেই কিছু নেই।