২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১১ আশ্বিন, ১৪৩০

অবৈধ জমি দখলের তান্ডবে ফতুল্লায় মাদ্রাসা ভাঙ্গচুর

ফতুল্লা
অবৈধ জমি দখলের তান্ডবে ফতুল্লায় মাদ্রাসা ভাঙ্গচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাতের আঁধারে ফতুল্লার একটি মাদ্রাসার জমি দখলের উদ্দেশ্যে ভাঙ্গচুরের অভিযোগ উঠেছে  ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতা মীর সোহেল আলী ও বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে।


এই ঘটনায় জড়িত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি  মীর সোহেল আলী অপর জন হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতা ও ফতুল্লা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী।যদিও তাদের দাবি তারা বিষয়টি জানেন না জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসা করার চেষ্টা করেছিলেন তারা। 


গত বুধবার ১২ই ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে নয়টায় দাপা মসজিদ সংলগ্ন কাজী ও মুন্সি কোরআনি হাফিজিয়া ও ইসলামিয়া মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার প্রায় কয়েক লক্ষাদিক টাকার আসবাপ পত্র নষ্ট হয়েছে এমনি দাবী করেছেন ভুক্তভোগী মোঃ কাজী আবদুল সেলিমের ভাতিজা আফজাল কাজী।

এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত আমাদের সংবাদ কর্মীকে আফজাল কাজী জানান মীর সোহেল এবং রিয়াদ মোঃ চৌধুরীর নেতৃত্বে গত কয়েক মাস ধরে মাদ্রাসার জায়গাটি দখলের চেষ্টা চলছে। এর আগের তারা কয়েকবার এই জায়গাটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে তাদের দুজনের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাদিক ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাদ্রাসায় হামলা করে। এর ফলে এই মাদ্রাসায় অধ্যায়নতর প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।     

এর আগে হামলা অভিযোগে আমরা থানা অভিযোগ এবং কোর্টে মামলা করেছিলাম কিন্তু এরপরেও এর কোন সমাধান হয়নি। তাই এবারের হামলার পর আমরা কোন অভিযোগ বা মামলা করিনি। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি মাদ্রাসা হামলা ঘটনায় আফজাল কাজী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞত ছয়জনের বিরুদ্ধে পরদিন ফতুল্লা থানার একটি অভিযোগ দায়ের করেন।   অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, হাজী আব্দুল সেলিম দীর্ঘদিন ধরে দাপা মসজিদ সংলগ্ন কাজী ওব মুন্সি কোরআনিয়া হাফেজিয়া ও ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে আসছিল।হঠাৎ মোহাম্মদ আব্দুর রব এবং মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এর মাদ্রাসার সম্পত্তি তাদের বলে দাবি করেন। তারা মাদ্রাসার জায়গাটি দখল করার জন্য গত ১৪ জানুয়ারি সকালে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার চাচাকে না পেয়ে মাদ্রাসার বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। পরবর্তীতে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করতে না দিতে তার চাচাকে বিদাদীরা নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসে।                                                          

এই ঘটনায় থানার মামলা গ্রহণ না করলে গত ১৬ জানুয়ারি তারা নারায়ণগঞ্জে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন আদালতে এই মামলার পরবর্তী গুণানীর তারিখ ১৫ মার্চ দেওয়া হয়। কিন্তু ফতুল্লা থানা বিএনপি'র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ রিয়াদ চৌধুরী জেলার একটি স্থানীয় পত্রিকাকে জানান, মাদ্রাসায় হামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না এর আগে মাদ্রাসায় হামলার ঘটনায় থানায় যে অভিযোগ হয়েছে ওই অভিযোগপত্রে আমার কোন নাম নেই।আবার এই বিষয়টি কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে হয়তো আমার নামটি জড়ানো হয়েছে।মাদ্রাসার এই জায়গাটির মালিক নান্নু যিনি সম্পর্কে আমার প্রতিবেশী চাচা হন।এই জায়গাটির সমস্যা নিয়ে কয়েকবার মিটিং হয় আমিও উপস্থিত থেকে সমাধান করার চেষ্টা করেছিলাম শুধু। আমি কেনো এই মাদ্রাসার জায়গা দখল করতে যাবো? আপনারা সরেজমিতে এসে তদন্ত করলেই বিষয়টি বুঝতে পারবেন। 

এনিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল জানান, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমাকেও তো একদিন মরতে হবে আমি কেন মাদ্রাসার জায়গা দখল করতে যাব আমি যদি মাদ্রাসা জায়গা দখল করার চেষ্টা করি তাহলে মৃত্যুর পর আমার এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। এই জায়গাটির মালিক মূলত নান্নু।অভিযোগকারীদের মাদ্রাসা বানিয়ে জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করেছে।এ নিয়ে অভিযোগকারীদের সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলে আসছিল। বিষয়টি সমাধান করার জন্য আমি দুই পক্ষকে নিয়ে কয়েকবার মিটিংয়ে বসে ছিলাম আর বুধবার রাতে মাদ্রাসায় হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিষয় নিয়ে এখন কোর্টে মামলা চলছে এতটুকুই আমার জানা রয়েছে।

 এলাকার সাঙ্গুদের নিয়ে রিয়াদ চৌধুরী ও মীর সোহেল রাতের আধারে মাদ্রাসাটি ভাঙচুর চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন যাবত এ ব্যাপারে সোহেল ও রিয়াদ চৌধুরী সাথে কথা বললে তারা বক্তব্যে বলেন এ জায়গাটা আসলে আমরা দখল করতেছি না। উক্ত জায়গাটি নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুম বাবুলের কাছ থেকে জায়গার পাওয়ার নেওয়ার পর সহ কয় শত লোক গিয়ে ভেঙ্গে গুরিয়ে দেন। জমিতে যে এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে এই মাদ্রাসাটি ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টাকায় পড়াশোনা করাতো তাদের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাবীন এলাকায় বিএনপি ও যুবলীগের নেতা কর্মীরা মিলে ফতুল্লা থানার '' কাজি আবদুল ওহাব মুন্সি কুরআনিয়া হাফেজিয়া ও ইসলামিয়া মাদ্রাসা '' এর একটি নকল দলিল বানিয়ে মাদ্রাসাটি দখল করে নিয়ে নেয়।এবং তারা মাদ্রাসার হুজুর ও ছাএদের মাদ্রাসা থেকে বাহির করে দেয়। তারপরই তারা মাদ্রাসাটি ভেঙ্গে ফেলে। আমাদের দেশ হচ্ছে একটি মুসলিম দেশ। এই দেশে কিছু নেতাকর্মীরা ইহুদী দের মতো মসজিদ মাদ্রাসা ভেঙ্গে ফেলছে।এদের মতো কিছু কাফের দের জন্য এলাকা বাসিদের নামাজ- কালাম পরতে কষ্ট হয়। এই নিকৃষ্ট মানুষ গুলো মাদ্রসার নকল দলিল বানিয়ে দলের জোর খাটিয়ে মাদ্রাসাটি নিজেদের নামে করে নেয়। তাদের এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য শত শত কুরআনের পাখি গুলে হাফেজ আলেম মাওলানা হতে পারছে না। এই নিকৃষ্ট মানুষ গুলোর কারনে এলাকার মানুষ গুলো কুরআন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের এই কর্মকাণ্ডে এলাকায় মানুষ গুলো সুষ্ঠ বিচার দাবি করছে।