০১ এপ্রিল, ২০২৩, ১৮ চৈত্র, ১৪২৯

শীতলক্ষ্যায় ছোট লঞ্চ চলাচলে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা

সারাদেশ রমজান আড়াইহাজার
শীতলক্ষ্যায় ছোট লঞ্চ চলাচলে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা


 
সোজাসাপটা রিপোর্ট: নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতটি রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোকে (ছোট লঞ্চ) ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে চলাচলের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তা বহাল রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ। রোববার (৩ এপ্রিল) নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে লঞ্চ মালিকদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
 
বৈঠকে নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী করা হয়েছে জানিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জোনের সভাপতি মো. বদিউজ্জামান বাদল। তিনি বলেন, ‘সানকিং ডেকের লঞ্চ চলাচলে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত জনহিতকর।’ এর প্রতিবাদে শিগগিরই বৈঠকে বসবেন বলেও জানিয়েছেন এই নেতা।
 
এর আগে ২০ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজ রূপসী-৯ এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনার পর দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়াতে নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লিউটিএ। তখন থেকেই লঞ্চ মালিকেরা দ্রুততম সময়ে লঞ্চ চালু করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জোনের নেতারা।
 
ওই বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন।
 
মো. বদিউজ্জামান বাদল বলেন, নৌ-মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আমাদেরকে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জে সানকিং ডেকের লঞ্চ (ছোট লঞ্চ) চলাচল করতে পারবে না।’ তবে, এই সিদ্ধা সঠিক হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
 
বাদল বলেন, আমরা দাবি করেছিলাম, লঞ্চগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার। কিন্তু তারা আমাদের অনুরোধ রাখেননি। আমরা আপার ডেকের লঞ্চ দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের বলেছেন, ‘লঞ্চ আপনারা নিয়ে আসেন নয়তো বানিয়ে নিন’।
 
‘আমরা কেন্দ্রীয় সভাপতির সাথে আলোচনা করবো। সারাদেশের প্রতিটি কমিটির নেতাদের ডাকা হবে। এ ব্যাপারে আমরা যেভাবে প্রতিবাদ জানানোর, জানাবো। কেননা, মন্ত্রণালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে সেটি যাত্রীদের জিম্মি করা হয়েছে। এতে কয়েক হাজার যাত্রী সাধারণ জিম্মি হয়ে পড়বে’ বলেন মো. বদিউজ্জামান বাদল।
 
এদিকে ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও এই রুটে সি-ট্রাক চলাচল বহাল রাখার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল। তিনি বলেছেন, ‘লঞ্চ বন্ধের পর যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবসহ নিরাপত্তার স্বার্থে সি-ট্রাক সেবা চালু হয়েছে।’
 
বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) বাবুলাল বৈদ্য বলেন, ‘ছোট লঞ্চগুলো চলাচলে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আপাত নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত একটি সি-ট্রাক এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত একটি বড় লঞ্চ চলাচল করছে।’
 
‘অনেকেই বড় লঞ্চ চালাতে চাচ্ছে। তাদের জানিয়েছি আবেদন করতে। সে প্রেক্ষিতে আমরা চলাচলের অনুমতির ব্যবস্থা করবো’ যুক্ত করেন বাবুলাল বৈদ্য।
 
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে সাতটি রুটে প্রতিদিন ৭০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে। সাতটি নৌপথ হলো নারায়ণগঞ্জ-হোমনা উত্তর থানা, নারায়ণগঞ্জ-মতলব থানা, নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ-শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-তালতলা ও নারায়ণগঞ্জ-বাঞ্ছারামপুর। এসব নৌপথে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন।