সোজা সাপটা রিপোর্ট: নারায়ণগঞ্জের বহুল প্রচারিত দৈনিক সোজা সাপটা পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান অনুগত ১১ নেতাকর্মী।
পত্রিকাটিতে প্রকাশিত ২টি নিউজে নিজেদের মানহানী হয়েছে উল্লেখ করে একটি নিউজের বিপরীতে ৭ জন এবং অপর নিউজের বিপরীতে ৪ জন নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১১টি মামলা দায়ের করে।
গত ৩০ অক্টোবর পত্রিকাটির প্রথম পাতায় প্রকাশিত “নারায়ণগঞ্জে আব্বা রাজনীতির হালচাল, আব্বা ছাড়া তারা জিরো” শীর্ষক প্রতিবেদনে নিজেদের মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে পৃথক পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেন ৭০নং উত্তর চাষাড়া এলাকার শহীদুল হোসেনের পুত্র নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সুমিলপাড়া এলাকার বাদশা মিয়ার পুত্র নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও থানা যুবলীগ সভাপতি মতিউর রহমান, ফতুল্লা থানার পশ্চিম মাসদাইর এলাকার জালাল উদ্দিন প্রধানের পুত্র মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, ফতুল্লা থানার পশ্চিম মাসদাইর এলাকার আব্দুল কাদির প্রধানের পুত্র জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল।
গত ১১ নভেম্বর পত্রিকাটির প্রথম পাতায় প্রকাশিত “সি এস পর্চায় দাগ খতিয়ান না থাকলেও পদলেহন জানেন তারা” শীর্ষক প্রতিবেদনে নিজেদের মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে পৃথক পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেন সদর থানাধীণ পাইকপাড়ার আব্দুর গফুরের পুত্র ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, ফতুল্লা থানাধীন মীর মোজাম্মেল আলীর পুত্র ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী, ফতুল্লা থানাধীন তল্লা এলাকার আব্দুল মান্নানের পুত্র যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, ফতুল্লা থানাধীন দেওভোগ নাগবাড়ী এলাকার মোহাম্মদ হোসেন আলীর পুত্র কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আইয়ুব আলী, সদর থানাধীন দেওভোগ এল. এন. এ রোডের নিজাম আলমের পুত্র হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, ফতুল্লা থানাধীন শ্রীবরদী এলাকার হানিফ মিয়ার পুত্র থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, বন্দর থানাধীন কেওঢালা এলাকার মোবারক আলীর পুত্র মদনপুর ইউপির চেয়ারম্যান সালাম মিয়া।
মামলার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন বলেন, কেন মামলা করেছি এটা আমার মনে হয়, আপনার বুঝা উচিত ছিলো। যে নিউজটি ছাপা হয়েছিলো সে নিউজে মাধ্যমে আমাদের মানহানি হওয়ার কারণেই মামলাটা করা। আমি সোজা সাপটার একজন নিয়মিত পাঠক ছিলাম।
কাউন্সিলর মতিউর রহমান বলেন, ভাই আপনারা মাঝে মাঝে আমাদের চৌদ্দগোষ্ঠি ধুইয়া ফালান। আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদেরও তো ফ্যামিলি আছে। এমনভাবে নিউজ করে বেইজ্জতি করেন আমাদের যে আমরা মানসম্মান নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। আমাদের যদি কোনো ভুল থাকে, তাহলে আমাদের বলেন আমরা সংশোধন হয়ে যাবো।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না, আমার দেখে বলতে হবে।
জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী বলেন, আপনারা কি লিখছেন এটা আপনাদের মনে নেই, এটা আবার প্রশ্ন করছেন। এটা তো ঠিক হলো না। আমি আপনার কাছে বাধ্য নই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য।
কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আইয়ুব আলী বলেন, মানহানির জন্যই মামলা করেছি, অন্য কোনো বিষয় নয়।
হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল বলেন, যে সংবাদটা প্রকাশিত করেছিলো, ঐ সংবাদের সাথে আমার আচার আচরণ ও দৈনন্দিন জীবনের সাথে সংবাদটা যায় না। সবাইকে এক পাল্লায় মেপে লিখে ফেললেই তো হয় না।
এছাড়াও অপর ৫টি মামলার বাদি ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মান্নান, থানা যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এম এ সালাম, কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু ও ছাত্রলীগের জেলার সাধারণ সম্পাদক রাসেল প্রধান কল রিসিভ করেন নি।
সোজা সাপটা পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তারা
